০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কন্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক অশান্তি, ৪ মাসের ফাতেমা কে পুকুরে ফেলে হত্যা করলেন মা

চার মাসের কন্যা সন্তান ফাতেমার খুনের মামলায় সাক্ষী হয়ে এবার আসামি হতে যাচ্ছেন মা রুমা বেগম (২৬)। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামে। এ ঘটনায় নিহতের মা রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের মৃত জলিল মিয়ার ছেলে দুবাই প্রবাসী অলি উল্লাহ’র স্ত্রী রুমা বেগম বেশ কিছুদিন যাবৎ মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। শুক্রবার রাতে রুমা বেগম তার বড় মেয়ে খাদিজা (৬) ও চার মাস বয়সী অপর কন্যা সন্তান ফাতেমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন । মানসিক যন্ত্রণা থেকে রাত দুইটার দিকে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার নাম করে ছোট সন্তান ফাতেমাকে বুকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে যায়। ভোর রাত ৫ টায় ঘুম ভেঙে গেলে দেখেন পাশে তার শিশু সন্তান ফাতেমা  নেই। সন্তান পাশে না থাকায় চিৎকার শুরু করেন রুমা বেগম। তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তার পরিবারসহ প্রতিবেশীরা শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করে। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বাড়ির পাশে একটি পুকুরে  শিশু ফাতেমার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করেন ।

৪ মাসের শিশু ফাতেমা কি করে পানিতে গেলো এবং তার মৃত্যু রহস্যজনক এমন দাবি করে এলাকাবাসী এবং প্রাথমিকভাবে পুলিশও ধারণা করে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। সে কারণে নিহত ফাতেমা বেগমের মা রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুমা বেগম তার সন্তানকে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ  মোহাম্মদ মাহবুব আলম জানান, শিশু ফাতেমা মারা যাওয়ার ঘটনায় তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নিহতের মা রুমা বেগমকে ১ নং সাক্ষী ও অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে শনিবার (২২ অক্টোবর) নবীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন রুমা বেগম মানসিকভাবে অসুস্থ। ওসি আরও বলেন, কন্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক অশান্তি ও বনিবনা না হওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে তিনি শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। রুমা বেগমের জবানবন্দী নেওয়ার জন্য তাকে আজ রবিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সম্পাদনাকারীর তথ্য

Dipu

কন্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক অশান্তি, ৪ মাসের ফাতেমা কে পুকুরে ফেলে হত্যা করলেন মা

আপডেট : ০৬:৫৮:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০২৩

চার মাসের কন্যা সন্তান ফাতেমার খুনের মামলায় সাক্ষী হয়ে এবার আসামি হতে যাচ্ছেন মা রুমা বেগম (২৬)। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামে। এ ঘটনায় নিহতের মা রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের মৃত জলিল মিয়ার ছেলে দুবাই প্রবাসী অলি উল্লাহ’র স্ত্রী রুমা বেগম বেশ কিছুদিন যাবৎ মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। শুক্রবার রাতে রুমা বেগম তার বড় মেয়ে খাদিজা (৬) ও চার মাস বয়সী অপর কন্যা সন্তান ফাতেমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন । মানসিক যন্ত্রণা থেকে রাত দুইটার দিকে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার নাম করে ছোট সন্তান ফাতেমাকে বুকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে যায়। ভোর রাত ৫ টায় ঘুম ভেঙে গেলে দেখেন পাশে তার শিশু সন্তান ফাতেমা  নেই। সন্তান পাশে না থাকায় চিৎকার শুরু করেন রুমা বেগম। তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তার পরিবারসহ প্রতিবেশীরা শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করে। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বাড়ির পাশে একটি পুকুরে  শিশু ফাতেমার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করেন ।

৪ মাসের শিশু ফাতেমা কি করে পানিতে গেলো এবং তার মৃত্যু রহস্যজনক এমন দাবি করে এলাকাবাসী এবং প্রাথমিকভাবে পুলিশও ধারণা করে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। সে কারণে নিহত ফাতেমা বেগমের মা রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুমা বেগম তার সন্তানকে হত্যার দায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ  মোহাম্মদ মাহবুব আলম জানান, শিশু ফাতেমা মারা যাওয়ার ঘটনায় তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নিহতের মা রুমা বেগমকে ১ নং সাক্ষী ও অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে শনিবার (২২ অক্টোবর) নবীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন রুমা বেগম মানসিকভাবে অসুস্থ। ওসি আরও বলেন, কন্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক অশান্তি ও বনিবনা না হওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে তিনি শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। রুমা বেগমের জবানবন্দী নেওয়ার জন্য তাকে আজ রবিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Facebook Comments Box