০৫:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার গ্রেপ্তার হলেন ইমরানের দলের আরেক শীর্ষ নেতা

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৯:১৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
  • ৪৩৩ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর এবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফাওয়াদ চৌধুরী নামে আরও এক শীর্ষ নেতাকে। বুধবার (১০ মে) এই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় ইসলামাবাদে সুপ্রিম কোর্টের (এসসি) বাইরে থেক।

এর আগে একইদিনে ইমরানের দলের মহাসচিব আসাদ উমরকে দুপুরের দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাওয়াদ চৌধুরীকে বুধবার ইসলামাবাদে সুপ্রিম কোর্টের (এসসি) বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে।

ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর পিটিআই নেতা ও কর্মীদের ওপর শেহবাজ সরকারের চলমান দমন-পীড়নের মধ্যে এই গ্রেপ্তারের ঘটনাটি ঘটল। খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী গ্রেপ্তার এড়াতে বুধবার সকাল ১১টা থেকে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন।

তবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে আসার পর চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেইনটেইন্যান্স অব পাবলিক অর্ডিন্যান্স (এমপিও) এর তৃতীয় ধারায় ফাওয়াদ চৌধুরীকে ইসলামাবাদ পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে সেক্রেটারিয়েট থানায় স্থানান্তর করে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছে, ‘১২ মে পর্যন্ত ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) থেকে সুরক্ষামূলক জামিন থাকা সত্ত্বেও সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাওয়াদ চৌধুরীকে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাকিস্তানে জঙ্গলের আইন চলছে।’

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকায় আইনজীবী সম্প্রদায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘এমনভাবে কোনও আবেদনকারীকে কখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট একদিন আগে তার প্রাক-গ্রেপ্তার জামিন মঞ্জুর করেছিল। যদিও সেটি তিনি আগেই ইসলামাবাদ পুলিশকে দেখিয়েছেন।

চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের ফলে দেশে বিভাজন তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, সংলাপের পথ প্রশস্ত করতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে জায়গা দিতে হবে।

অবশ্য ফাওয়াদ চৌধুরীর গ্রেপ্তারের আগে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) পিটিআই মহাসচিব আসাদ উমরকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে, পাকিস্তানের জবাবদিহি আদালত ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। জবাবদিহিতা আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বশির এর আগে মামলার শুনানি করেন এবং পরে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) ওয়ারেন্টে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স তাকে গ্রেপ্তার করে।

পাকিস্তানের দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার এই পদক্ষেপে দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেহবাজ শরিফের সরকার খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান এবং ইসলামাবাদসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে ডেকেছে।

বিক্ষোভ-সহিংসতায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বিক্ষোভ দমাতে পাকিস্তানের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে এবং এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় এক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সম্পাদনাকারীর তথ্য

এবার গ্রেপ্তার হলেন ইমরানের দলের আরেক শীর্ষ নেতা

আপডেট : ০৯:১৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর এবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফাওয়াদ চৌধুরী নামে আরও এক শীর্ষ নেতাকে। বুধবার (১০ মে) এই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় ইসলামাবাদে সুপ্রিম কোর্টের (এসসি) বাইরে থেক।

এর আগে একইদিনে ইমরানের দলের মহাসচিব আসাদ উমরকে দুপুরের দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাওয়াদ চৌধুরীকে বুধবার ইসলামাবাদে সুপ্রিম কোর্টের (এসসি) বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে।

ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর পিটিআই নেতা ও কর্মীদের ওপর শেহবাজ সরকারের চলমান দমন-পীড়নের মধ্যে এই গ্রেপ্তারের ঘটনাটি ঘটল। খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী গ্রেপ্তার এড়াতে বুধবার সকাল ১১টা থেকে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন।

তবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে আসার পর চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেইনটেইন্যান্স অব পাবলিক অর্ডিন্যান্স (এমপিও) এর তৃতীয় ধারায় ফাওয়াদ চৌধুরীকে ইসলামাবাদ পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে সেক্রেটারিয়েট থানায় স্থানান্তর করে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছে, ‘১২ মে পর্যন্ত ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) থেকে সুরক্ষামূলক জামিন থাকা সত্ত্বেও সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাওয়াদ চৌধুরীকে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাকিস্তানে জঙ্গলের আইন চলছে।’

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকায় আইনজীবী সম্প্রদায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘এমনভাবে কোনও আবেদনকারীকে কখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট একদিন আগে তার প্রাক-গ্রেপ্তার জামিন মঞ্জুর করেছিল। যদিও সেটি তিনি আগেই ইসলামাবাদ পুলিশকে দেখিয়েছেন।

চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের ফলে দেশে বিভাজন তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, সংলাপের পথ প্রশস্ত করতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে জায়গা দিতে হবে।

অবশ্য ফাওয়াদ চৌধুরীর গ্রেপ্তারের আগে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) পিটিআই মহাসচিব আসাদ উমরকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে, পাকিস্তানের জবাবদিহি আদালত ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। জবাবদিহিতা আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বশির এর আগে মামলার শুনানি করেন এবং পরে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) ওয়ারেন্টে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স তাকে গ্রেপ্তার করে।

পাকিস্তানের দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার এই পদক্ষেপে দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেহবাজ শরিফের সরকার খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান এবং ইসলামাবাদসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে ডেকেছে।

বিক্ষোভ-সহিংসতায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বিক্ষোভ দমাতে পাকিস্তানের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে এবং এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় এক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Facebook Comments Box