০৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারী খাল থেকে মাটি বিক্রি নিয়ে সংঘর্ষের আশংকা

 

মমিনুল হক রুবেল: নবীনগরে সরকারী খাল ও ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি নিয়ে এলাকাবাসী ও মাটি খেকুদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের আশংকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউরফতেহপুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকার মাটি বিক্রি করার প্রস্ততিকালে স্থানীয় জণগন ও অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা মাটি খেকুরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।এনিয়ে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরজমান,যেকোন সময় দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।

 

তবে মাটি খেকুরা বলছেন সরকারী খাল থেকে মাটি উত্তোলনের জন্য সরকারী অনুমোতি নিয়েছে।কিন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনা ভুমি মাহমুদা জাহান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল সিদ্দিক বলছেন সরকারী খাল থেকে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করার অনুমোতি দেওয়ার তাদের কোনো এখতিয়ার নেই,এ বিষয়ে তারা অবগত নন।

জানাযায়,মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক ও লাউরফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম নবীনগর উপজেলার গুচ্ছু গ্রাম এলাকার খাল থেকে পাশের মুরাদনগর উপজেলার গাংগেরকুট গ্রামে মাটি বিক্রির উদ্ধেশ্যে ড্রেজার পাইপ লাইন স্থাপন করেন।

 

খবর পেয়ে আহম্মদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার মাহবুব আলম ও বর্তমান মেম্বার মামুন চানমুনি সরকার শত শত এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে বানিজ্যিক কারণে মাটি বিক্রির অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করে দেয়।এতে করে প্রভাবশালী ভূমি খেকুরা ক্ষিপ্ত হয়ে রাতের আঁধারে পুনরায় ড্রেজার পাইপ লাইন স্থাপন শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও ভূমিকে খেকুদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিভিন্ন সূত্রে আরো জানাযায়, ড্রেজার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ড্রেজার ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান ২০২২ সালে ১৫ টাকা ফুটে ১ লক্ষ ফুট মাটি ১৫ লক্ষ টাকা পাশের উপজেলা মুরাদনগরের গাঙ্গেরকোট গ্রামে বিক্রি করেন।একই কায়দায় গত সোমবার অবৈধ ড্রেজার সংযোগ দিয়ে ৩ লক্ষ ফুট মাটি ১৫ টাকা ফুট হারে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাটি গাঙ্গেরকোট গ্রামসহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে বিক্রির প্রস্ততি নেয়।

এ বিষয়ে আহম্মদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার মাহবুবুর রহমান জানান,খালের নামে নবীনগরের ফসলি জমির মাটি ড্রেজার দিয়ে কেটে মুরাদনগরে বিক্রি করার অনুমতি তারা পেলে কোথায় থেকে,সরকার যদি এমন অন্যায় অনুমতি দিয়ে থাকে আমরা শত শত এলাকাবাসী সরকারের দপ্তরে হাজির হয়ে প্রতিবাদ জানাবো।

এ বিষয়ে লাউরফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ ৪ নং ওয়াডের বর্তমান মেম্বার মামুন চানমনি সরকার জানান, আব্দুর রহমান নামক ড্রেজার ব্যবসায়ি সরকারি খাল ও জমি থাকে ১৫ টাকা ফুটে কোটি টাকার মাটি পাশ্ববর্তী মুরাদনগরে বিক্রি করে দেয়ার জন্য ড্রেজার মেশিন স্থাপন করেছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে সরকারি সম্পদ রক্ষায় বাঁধা প্রদান করেছি।যারা মাটি বিক্রি করতেছে তাদের উদ্দেশ্য যদি সেচের জন্য খাল খনন হত, তবে তারা ফসলি জমি না কেটে খালের মাঝখানে খনন করে মাটি খালের দুইপাড়ে ফেলত।

খাল খনন করা তাদের উদ্দেশ্য নয়, তাদের উদ্দেশ্য সরকারি খাল ও জমি থেকে কোটি কোটি টাকার মাটি বিক্রি করে ব্যবসা করা। তারা বিগত বছরেও বানিজ্যিক কারণে সরকারি খাল থেকে মাটি বিক্রি করেছে। এইবারও ঠিক একই অবস্থা,ঘটনাটি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে নির্দেশ দিয়েছে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করে দেয়ার জন্য,রাতের আধাঁরে যেন মাটি কাটতে না পারে প্রয়োজনে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহাড়া দেয়ার জন্য।

মাটি কাটার বিষয়ে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ি আব্দুর রহমান জানান,গত বছর এসিল্যান্ড এসে মেপে দিয়ে গিয়েছে মাটি কাটার জন্য, এইবার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমাকে নির্দেশ দিয়েছে জমিগুলো কেটে মাটি মাটি বিক্রি করার জন্য।

এ ব্যাপারে লাউরফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান,আমরা গত বছর অনুমোদন নিয়ে কৃষি জমিতে সেচের জন্য অদখাল খননের কাজ শুরু করেছি,পানি চলে আসায় ঐ বছর কাজ শেষ করতে পারিনি তাই এবছর শুরু করেছি।মাটি বিক্রির অভিযোগের বিষয়টি আমরা দেখব।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক জানান,এবিষয়ে আমি জানিনা অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন সহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাব তখন বলতে পারব।

 

এবিষয়ে নবীনগর সহকারী কমিশনার ভূমি মাহমুদা জাহান জানান, আমি এবিষয়ে কোন ধরনের অবগত নই।এমন হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সম্পাদনাকারীর তথ্য

Mominul Haque Rubel

সরকারী খাল থেকে মাটি বিক্রি নিয়ে সংঘর্ষের আশংকা

আপডেট : ০১:০৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩

 

মমিনুল হক রুবেল: নবীনগরে সরকারী খাল ও ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি নিয়ে এলাকাবাসী ও মাটি খেকুদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের আশংকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউরফতেহপুর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন সরকারি খাল থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকার মাটি বিক্রি করার প্রস্ততিকালে স্থানীয় জণগন ও অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা মাটি খেকুরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।এনিয়ে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরজমান,যেকোন সময় দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।

 

তবে মাটি খেকুরা বলছেন সরকারী খাল থেকে মাটি উত্তোলনের জন্য সরকারী অনুমোতি নিয়েছে।কিন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনা ভুমি মাহমুদা জাহান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল সিদ্দিক বলছেন সরকারী খাল থেকে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করার অনুমোতি দেওয়ার তাদের কোনো এখতিয়ার নেই,এ বিষয়ে তারা অবগত নন।

জানাযায়,মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক ও লাউরফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম নবীনগর উপজেলার গুচ্ছু গ্রাম এলাকার খাল থেকে পাশের মুরাদনগর উপজেলার গাংগেরকুট গ্রামে মাটি বিক্রির উদ্ধেশ্যে ড্রেজার পাইপ লাইন স্থাপন করেন।

 

খবর পেয়ে আহম্মদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার মাহবুব আলম ও বর্তমান মেম্বার মামুন চানমুনি সরকার শত শত এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে বানিজ্যিক কারণে মাটি বিক্রির অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করে দেয়।এতে করে প্রভাবশালী ভূমি খেকুরা ক্ষিপ্ত হয়ে রাতের আঁধারে পুনরায় ড্রেজার পাইপ লাইন স্থাপন শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও ভূমিকে খেকুদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিভিন্ন সূত্রে আরো জানাযায়, ড্রেজার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ড্রেজার ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান ২০২২ সালে ১৫ টাকা ফুটে ১ লক্ষ ফুট মাটি ১৫ লক্ষ টাকা পাশের উপজেলা মুরাদনগরের গাঙ্গেরকোট গ্রামে বিক্রি করেন।একই কায়দায় গত সোমবার অবৈধ ড্রেজার সংযোগ দিয়ে ৩ লক্ষ ফুট মাটি ১৫ টাকা ফুট হারে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাটি গাঙ্গেরকোট গ্রামসহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে বিক্রির প্রস্ততি নেয়।

এ বিষয়ে আহম্মদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার মাহবুবুর রহমান জানান,খালের নামে নবীনগরের ফসলি জমির মাটি ড্রেজার দিয়ে কেটে মুরাদনগরে বিক্রি করার অনুমতি তারা পেলে কোথায় থেকে,সরকার যদি এমন অন্যায় অনুমতি দিয়ে থাকে আমরা শত শত এলাকাবাসী সরকারের দপ্তরে হাজির হয়ে প্রতিবাদ জানাবো।

এ বিষয়ে লাউরফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ ৪ নং ওয়াডের বর্তমান মেম্বার মামুন চানমনি সরকার জানান, আব্দুর রহমান নামক ড্রেজার ব্যবসায়ি সরকারি খাল ও জমি থাকে ১৫ টাকা ফুটে কোটি টাকার মাটি পাশ্ববর্তী মুরাদনগরে বিক্রি করে দেয়ার জন্য ড্রেজার মেশিন স্থাপন করেছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে সরকারি সম্পদ রক্ষায় বাঁধা প্রদান করেছি।যারা মাটি বিক্রি করতেছে তাদের উদ্দেশ্য যদি সেচের জন্য খাল খনন হত, তবে তারা ফসলি জমি না কেটে খালের মাঝখানে খনন করে মাটি খালের দুইপাড়ে ফেলত।

খাল খনন করা তাদের উদ্দেশ্য নয়, তাদের উদ্দেশ্য সরকারি খাল ও জমি থেকে কোটি কোটি টাকার মাটি বিক্রি করে ব্যবসা করা। তারা বিগত বছরেও বানিজ্যিক কারণে সরকারি খাল থেকে মাটি বিক্রি করেছে। এইবারও ঠিক একই অবস্থা,ঘটনাটি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে নির্দেশ দিয়েছে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করে দেয়ার জন্য,রাতের আধাঁরে যেন মাটি কাটতে না পারে প্রয়োজনে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহাড়া দেয়ার জন্য।

মাটি কাটার বিষয়ে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ি আব্দুর রহমান জানান,গত বছর এসিল্যান্ড এসে মেপে দিয়ে গিয়েছে মাটি কাটার জন্য, এইবার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমাকে নির্দেশ দিয়েছে জমিগুলো কেটে মাটি মাটি বিক্রি করার জন্য।

এ ব্যাপারে লাউরফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান,আমরা গত বছর অনুমোদন নিয়ে কৃষি জমিতে সেচের জন্য অদখাল খননের কাজ শুরু করেছি,পানি চলে আসায় ঐ বছর কাজ শেষ করতে পারিনি তাই এবছর শুরু করেছি।মাটি বিক্রির অভিযোগের বিষয়টি আমরা দেখব।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক জানান,এবিষয়ে আমি জানিনা অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন সহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাব তখন বলতে পারব।

 

এবিষয়ে নবীনগর সহকারী কমিশনার ভূমি মাহমুদা জাহান জানান, আমি এবিষয়ে কোন ধরনের অবগত নই।এমন হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box